অবৈধ বালু-পাথরের ট্রলি ও পিকআপ চলাচল
৫ বছরে ৫০ কোটি টাকার সড়ক নষ্ট
- আপলোড সময় : ৩০-১১-২০২৪ ০৮:১৯:০৪ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ৩০-১১-২০২৪ ০৮:১৯:০৪ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ধোপাজান-চলতি নদীর অবৈধ বালু-পাথরবাহী ট্রলি ও পিকআপ বেপরোয়া চলাচলের কারণে গত ৫ বছরে অন্তত ৫০ কোটি টাকার সড়ক নষ্ট হয়েছে। বিগত সময়ে উপজেলার সুরমা ও জাহাঙ্গীরনগর ইউপি’র প্রায় ২০টি সড়ক বিভিন্ন সময়ে সরকারি বরাদ্দে সিসি, আরসিসি ঢালাই এবং কার্পেটিং করে সংস্কার করা হয়। কিন্তু অবৈধ বালু-পাথরবাহী ট্রলি ও পিকআপ চলাচলে এসব সড়কের বিনাশ হয়েছে। এই কারণে প্রায় ৫০ কোটি টাকার সড়ক
নষ্ট হয়েছে বলে দাবি এলজিইডি’র। রবিবার এমন তথ্য দিয়েছে সদর উপজেলা এলজিইডি অফিস।
জানা যায়, সদর উপজেলার সুরমা ও জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কে গত ৫ বছর ধরে পাথরবাহী ট্রলি ও পিকআপ বেপরোয়া চলাচল করে আসছে। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে দিনে ও রাতে বেপরোয়া চলাচল করছে এই অবৈধ যানবাহন। এতে হালুয়ারঘাট-মঙ্গলকাটা, মঙ্গলকাটা-চৌমুহনী, চৌমুহনী-ডলুরা, মীরেরচর-কৃষ্ণনগর, কৃষ্ণনগর-বেরীগাঁও সড়কের, আমপারা-সৈয়দপুর, সৈয়দপুর-ইব্রাহীমপুর সড়কের এবং ইব্রাহীমপুর-মইনপুর সড়কের মারাত্মক বিনাশ হয়েছে।
এসব বেপরোয়া ও অবৈধ বালু-পাথরবাহী যানবাহন চলাচলের শব্দে স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন-যাপন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে। সড়ক পার্শ্ববর্তী বাসিন্দারা দিনের বেলায় সড়কে চলাচলে নিরাপত্তা নেই, সড়কের পাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর লেখাপড়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি, রাতের বেলায় নির্বিঘেœ ঘুমানো যাচ্ছে না। যানবাহন চলাচলের বিকট শব্দে রোগীদের মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি হয়ে আসছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত ৫ বছরে প্রায় ৬০ কোটি টাকার রাস্তা-ঘাটের বিনাশ হয়েছে। এই কারণে দুই ইউনিয়নের কয়েকটি রাস্তা সদ্য মেরামতের পরপরই নষ্ট হয়েছে। এই অবৈধ মালবাহী যানবাহন চলাচলের কারণে মুর্চা থেকে আমপাড়া বাজার পর্যন্ত রাস্তার বেহাল অবস্থা এখনও দৃশ্যমান রয়েছে। আমপাড়া বাজার থেকে সৈয়দপুর হয়ে ইব্রাহীমপুর গ্রামের আনন্দ বাজার পর্যন্ত রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় মানুষের ভোগান্তি চরমে। পূর্ব ইব্রাহীমপুর থেকে উত্তরপাড়া পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ।
মইনপুর কবরস্থানের পাশের রাস্তা প্রায় দুইশত ফুট ইট সলিং রাস্তার বেহাল অবস্থা হয়েছে। মালবাহী পিকআপ ও ট্রলি চলাচলের কারণে হালুয়ারঘাট-রহমতপুর কাঁচা রাস্তার বেহাল অবস্থা হয়েছে। এসব সড়কে মালবাহী ট্রলি-পিকআপ চলাচল নিষিদ্ধ করার দাবি স্থানীয়দের।
মঙ্গলকাটা গ্রামের আব্দুল মুহিত বলেন, বালু-পাথরবাহী ট্রলি-পিকআপ বেপরোয়া চলাচলের কারণে আমাদের চলাচলে নিরাপত্তা নেই, শিক্ষার্থীর লেখাপড়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা এসব অবৈধ যানবাহন বন্ধের দাবি জানাই।
চৌমুহনী এলাকার বাসিন্দা শাহ আলম ইলিয়াস বলেন, যানবাহন চলাচলে সড়কের বিনাশ, লেখাপড়ার এবং রোগীদের সমস্যা হচ্ছে। আমরা চাই এসব অবৈধ যানবাহন দ্রুত বন্ধ করে সড়ক নিরাপদ করা হোক।
জাহাঙ্গীরনগর ইউপি চেয়ারম্যান রশিদ আহমদ বলেন, অনেকে অনেকবার চেষ্টা করেছেন সড়কে অবৈধ যানবাহন বন্ধ করতে। কিন্তু পারেন নি। এখন আমরা প্রশাসনিকভাবে যানবাহন বন্ধ করার দাবি জানাই।
সদর উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, বিগত ৫ বছরে পর্যায়ক্রমে অনুমান ৫০ কোটি টাকার বরাদ্দ হয়েছে এমন হতে পারে। এসব বরাদ্দ দিয়ে বিভিন্ন সড়কের উন্নয়ন করা হয়েছে। এখনও কয়েকটি সড়কের কাজ চলছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ